ভাস্কর্য নির্মাণ বৈধ কি না? এই সম্পর্কে কুরআনের আয়াত ও তার ব্যাখ্যা - ইসলামি জিজ্ঞাসা

••• ভাস্কর্য নির্মাণ বৈধ কিনা তাঁর একটি চূড়ান্ত সমাধান •••

*** ভাস্কর্য নির্মাণের পক্ষের লোকেরা সূরা সাবা’র একটি আয়াত পেশ করত: এটাকে হালাল ও বৈধ ফতওয়া দেয়ার একটি চরম অপব্যাখ্যা করেছেন । এটা তাঁদের অজ্ঞতা, জাহালাত ও ইল্মি দৈন্যতা প্রমাণ করে । আর তাই অনিবার্য প্রয়োজনে জাতির সামনে বিষয়টি তুলে ধরতে বাধ্য হলাম ।



** আল্লাহপাক বলেছেন 

يعملون له ما يشاء من محاريب و تماثيل و جفان كالجواب و قدور راسيات 

“ জ্বীনেরা সাইয়্যিদুনা সোলাইমান আ:’র ইচ্ছা অনুযায়ী দূর্গ, ভাস্কর্য , হাউস সদৃশ বৃহৎ আকারের পাত্র এবং চুল্লির উপর স্হাপিত বিশাল আকারের ডেগ নির্মাণ করতো ।”

সূরা সাবা ১৩

*** আয়াতের মধ্যে দেখা যাচ্ছে বাহ্যত: ভাস্কর্য নির্মাণ করা বৈধ ! এবার আসুন বিশ্লেষণে যাই .....

*** পবিত্র কুরআনে মূর্তি ও ভাস্কর্য সমার্থবোধক তিনটি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে । বিগত পোস্টে তা’ উল্লেখ করেছিলাম । 

*** আসনাম ( اصنام ) কাঠ/ স্বর্ণ / রৌপ্য ইত্যাদি দ্বারা নির্মিত মূর্তি । أوثان হলো পাথর দ্বারা তৈরী মূর্তি । তামাছীল ( تماثيل ) তিমছাল শব্দের বহুবচন । প্রাণী / অপ্রাণী উভয় শ্রেণীর ভাস্কর্য বা মূর্তিকে বলা হয় । صنم ও وثن দুটোই তামাছীলের অংশ । তামাছীল ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে । আরবী সাহিত্য ও অভিধান দেখে নিতে পারেন । 

*** পবিত্র কুরআন থেকে সুস্পস্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, তামাছীল শব্দ থেকে মানুষ/ পশু- পাখী/ বৃক্ষের মূর্তি বা ভাস্কর্য  অর্থ নেয়া হয়েছে । যেমন আল্লাহপাক বলেন 

اذ قال لأبيه و قومه ما هذه التماثيل التي انتم لها عاكفون 

“ সাইয়্যিদুনা ইব্রাহিম আ: যখন তাঁর বাবা ও সম্প্রদায়কে বললেন এসব কিসের মূর্তি , যেগুলোর পূজারী হয়ে তোমরা সবাই বসে আছো ? 

সূরা আল আম্বিয়া ৫২

ওখানে মূর্তিগুলো ছিলো মানুষের । দেবতা বানিয়ে বাপ- দাদাদের অনুসরণে পূজা করা হতো । আয়াতটিতে দেবতার মূর্তি / মানুষ নামের প্রাণীর ভাস্কর্য নির্মাণ স্পস্ট শির্ক প্রমাণিত হলো । এ আয়াত দ্বারা প্রতিয়মান হয় যে, সাইয়্যিদুনা সোলাইমান আ:’র জন্য নির্মিত ভাস্কর্য কোন মানুষ বা দেবতার ছিলোনা । যেহেতু অন্য আয়াতে তামাছীল অর্থ দেবতার মূর্তি বুঝানো হয়েছে । অতএব, জ্বীনেরা পাখী/ বৃক্ষ শ্রেণীর ভাস্কর্য নির্মাণ করেছিলেন নবী’র আ: জন্য । এটাই পরিষ্কার । ওসব ভাস্কর্য মানুষ বা দেবতার ছিলোনা । কেননা নবীগণ আ: শির্ক করতেই পারেন না ।

*** এ উম্মতের জন্য পশু- পক্ষীর ভাস্কর্য নির্মাণও উচিত নয় । কেননা অন্য নবীদের আ: বিধান এখন চলেনা । এখন চলে এবং চলবে একমাত্র মহানবী সা:’র নির্দেশ কেয়ামত পর্যন্ত । 

একটি ছহীহ হাদিসে মহানবী সা: বলেছেন “ আজ যদি সাইয়্যিদুনা ঈসা আ: , মুসা আ:ও জীবিত থাকতেন, আমার অনুসরণ ছাড়া তাঁদের জন্য আর কোন বিকল্প পথ খোলা থাকতোনা ।”

اتمام الحجة ص ٥٦

مدارج السالكين


*** অতএব, কোন ধরণের ভাস্কর্য নির্মাণ বৈধ নয় । এটাই চূড়ান্ত । 


MQM Saifullah Mehruzzaman

সংকলন ও সংরক্ষণ-  মোঃ আসলাম শেখ 

Comments

Popular posts from this blog

সালাম দেয়া, সালামের গুরুত্ব ও এর প্রসার -Habibur Rahman

মাজহাবের আদ্যপ্রান্ত!! এবং কুরআন ও সুন্নাহভিত্তিক ব্যখ্যা - ইসলামি জিজ্ঞাসা