সাপ সম্পর্কে ইসলামের বর্ননা ও বিভিন্ন কথা- ইসলামি জিজ্ঞাসা

••• “ সাপ “ সম্পর্কে জানুন ! •••
*** মহান আল্লাহর ভয়ানক সৃষ্টির মধ্যে “ সাপ” প্রাণীটি অন্যতম । পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় তাঁর অবদান থাকতে পারে ! সাধারণভাবে মানুষ এ প্রাণীটিকে ভয় পায় ! আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে ভয় পাই ।


*** পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহ Study করে এ প্রাণীটি সম্পর্কে অধিকাংশই নেগেটিভ পেয়েছি । অর্থাৎ নেগেটিভ স্হানে তাকে ব্যবহার করা হয়েছে । পবিত্র কুরআনে স্হান পাওয়া প্রাণীদের মধ্যে “ অজগর সাপের “ কথা বহুবার উল্লেখিত হয়েছে ।

*** সাইয়্যিদুনা মুসা আ: ফেরআউনের যাদুকরদের মোকাবিলায় আল্লাহর নির্দেশে হাতের লাঠি মাটিতে নিক্ষেপ করা মাত্রই তা’ স্পস্ট ভয়ংকর অজগর সাপে রূপান্তরিত হয় । পবিত্র কুরআনের ভাষায়

فالقي عصاه فإذا هي ثعبان مبين

“ অত:পর সাইয়্যিদুনা মুসা আ: যখন তাঁর লাঠিটি নিক্ষেপ করলেন, সুস্পস্ট অজগর সাপে পরিণত হয় ।”

সূরা আল আ’রাফ ১০৭

*** সাপটি এতোটা ভয়ংকর ছিলো যে, সাইয়্যিদুনা মুসা আ: নিজেও সাপের পেছন দিক থেকে পালাতে লাগলেন ! এমতাবস্হায় আল্লাহপাক ডাক দিলেন “ হে মুসা ! আপনি ভয় পাবেন না । সামনে অগ্রসর হোন ।”

পবিত্র কুরআনের ভাষায় ....

و ان الق عصاك فلما راءها تهتز كأنها جان ولي مدبرا و لم يعقب يا موسي اقبل و لا تخف انك من الآمنين

সূরা আল ক্বসস ৩১
সূরা আন নামাল ১০

*** এখানে সাপকে দুশমনের বিরুদ্ধে মারণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে । অন্যদিকে কবরের মধ্যে জাহান্নামীদেরকে শাস্তি প্রদানের অন্যতম উপাদান রাখা হয়েছে সাপ !

*** মহানবী সা: বলেছেন “ কবরের মধ্যে পাপীদেরকে শাস্তি প্রদানের জন্য আল্লাহপাক অকল্পনীয় অত্যন্ত বিষাক্ত এমন একটি সাপ মোতায়েন করেছেন, যদি সে দুনিয়ার বুকে একটি নি:শ্বাস নিক্ষেপ করে, তাঁর বিষ ক্রিয়ায় পৃথিবীর সমস্ত সবুজ গাছপালা, তরুলতা শুকিয়ে মরে যাবে এবং কেয়ামত পর্যন্ত সবুজ কোন কিছু আর গজাবেনা ।”

সুনানে তিরমিযি
দারেমী ।

*** মহানবী সা: বলেছেন “ যে ব্যক্তি সাপের ভয়ে সাপ হত্যা করলোনা, সে আমার উম্মতের মধ্যে শামিল নয় ।”
সুনানে আবু দাউদ ৫২৪৯
মিশকাত ৪১৪০

*** মহানবী সা: বলেছেন “ জাহান্নামীদেরকে শাস্তি প্রদানের জন্য কবরে এমন সাপ মোতায়েন রাখা হয়েছে, যাঁর চক্ষু হবে আগুনের ! নখগুলো হবে লোহার ! প্রতিটি নখ লম্বায় হবে এক দিনের দূরত্ব পথ ! সাপের আওয়াজ হবে বজ্রের ন্যায় বিকট !”

মহানবী সা: বলেন “ জাহান্নামীদের জন্য কবরে ৯৯ টি সাপ রাখা হয়েছে দংশন করার জন্য ।

মিশকাতুল মাসাবীহ ১৩৪

*** মহানবী সা: বলেছেন “ সব প্রকারের সাপ মেরে ফেলো । বিশেষ করে পিঠে দুটো কালো রেখা বিশিষ্ট এবং লেজ কাটা সাপ অবশ্যই মারবে । কেননা এ সাপ চোখের জ্যোতি নষ্ট করে দেয় এবং নারীদের গর্ভপাত ঘটায় ।”
ছহীহুল বোখারি ৩২৯৭
ছহীহ মুসলিম ২২৩৩
মিশকাত ৪১১৭

*** হে আল্লাহ ! কবরের আযাব থেকে আমাদেরকে রক্ষা করুন । আমিন ।

*** সাপের বিষ থেকে বিজ্ঞানীগণ মেডিসিন তৈরী করে থাকেন বলে শুনেছি । সাপও পোষ মানা প্রাণীদের অন্যতম । তবে সাপ লালন- পালন করা ! ব্যবসা করা ! খেলা দেখানো সুস্পস্ট হারাম । পৃথিবীতে এমন কিছু জাতি পাওয়া যায়, যাঁরা সাপ খায় ! সাপ তাঁদের খাবার ! অদ্ভুত পৃথিবী ! সাপের জন্য কম্বোডিয়া দেশটি বিখ্যাত ! এটি সবচে’ অধিক সাপের দেশ হিসেবে পরিচিত ! এ দেশের লোকেরা সাপকে মোটেই ভয় পায়না ! বরং সাপ এদেরকে ভয় পায় !

*** তবে সাইয়্যিদুনা মুসা:’র সাপ ও কবরের সাপের সাথে দুনিয়ার সাপের জগতকে তুলনা করবেন না ।

*** এ সাপ নিয়ে সত্য/ মিথ্যা অনেক রকমের গল্প - কাহিনী সমাজে শ্রুত রয়েছে ! সর্বাবস্হায় ইহা একটি ভয়ংকর প্রাণী !

*** জ্বীন- শয়তানও সাপের রূপ নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে থাকে ।

মহানবী সা: বলেছেন “ ঘরের ভেতরে যদি সাপ ঢুকে পড়ে এবং তোমরা সাপ থাকার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে থাকো, এমতাবস্হায় তিন বার এ কথা বলো “ ঘর থেকে বের হবেনা । “ অন্যথায় তোমাকে হত্যা করতে বাধ্য হবো । এতদসত্ত্বেও সে যদি বেরিয়ে আসে, তাকে হত্যা করো । যেহেতু সে শয়তান ।”

অন্য বর্ণনায় এসেছে “ তিন দিন পর্যন্ত ভয় প্রদর্শন করতে থাকবে । এরপরেও যদি বের হয়, তাকে হত্যা করো ।”

সুনানে আবু দাউদ ৫১৬৯

MQM Saifullah Mehruzzaman

Comments

Popular posts from this blog

সালাম দেয়া, সালামের গুরুত্ব ও এর প্রসার -Habibur Rahman

মাজহাবের আদ্যপ্রান্ত!! এবং কুরআন ও সুন্নাহভিত্তিক ব্যখ্যা - ইসলামি জিজ্ঞাসা